শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস
আপনি কি শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস সম্বন্ধে ভাবছেন। আপনি কি শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস হিসেবে নতুন ও ইউনিক কিছু তথ্য খুঁজছেন। শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস গুলো সম্বন্ধে এমনই কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে চলেছি আজ আপনাদের। যা আপনার সোনামণির স্বাস্থ্য ও সুস্থতায় সহায়তা করবে।
সামনে তো শীতের মৌসুম আসছে আর এই শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস হিসেবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে চলেছেন আজকের আর্টিকেলে। তাই আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র: শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস
ভূমিকা
আপনি কি শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস সম্পর্কে চিন্তিত? শীতের শুরু থেকেই প্রায় সকল মায়ের এ বিষয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়। শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস সম্পর্কে দুশ্চিন্তা আর নয়। কারণ শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস সম্বন্ধে বলবো আজকের আর্টিকেলে। শীতের সময় ঘুম থেকে উঠার সাথে সাথে বাচ্চাকে গরম পোশাক পরিধান করান। বাচ্চাকে হাতমুখ ধোয়ার কাজে গরম পানি ব্যবহার করতে দিন। তারপর বাচ্চাকে সকালের নাস্তা দিন। সকালের নাস্তাটি অবশ্যই গরম হতে হবে।
যদি আপনার শিশু নবজাতক হয়ে থাকে তাহলে ঘুম থেকে উঠার সাথে সাথে হালকা গরম পানি দিয়ে একটা কাপড় ভিজিয়ে বাচ্চার মুখ, গলা, বুক, পিঠ ও পা ভালোভাবে মুছে দিন। এটাই শীতে নবজাতকের যত্নে করণীয় প্রথম ধাপ। তারপর বাচ্চার শরীরে তেল মালিশ করে বাচ্চাকে পরিষ্কার কাপড় পরিয়ে দিন। তারপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি নবজাতকের জন্য খুবই জরুরী সেটি হচ্ছে শীতের সকালের রোদ বাচ্চার শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস
শীতে আপনার শিশুকে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর দাঁত ব্রাশ করা হাতমুখ ধোয়া এসব কাজে গরম পানি ব্যবহার করতে দিন। এমনকি খাওয়া ও বিভিন্ন কাজের জন্য শিশুকে গরম পানি দিন। এটি শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ঘরে একটি হিউমিডিফায়ার ইনস্টল করুন যাতে আদ্রতার মাত্রা সর্বোত্তম ভাবে বজায় থাকে। বাচ্চার শরীরে নিয়মিত অলিভ অয়েল তেল ব্যবহার করতে পারেন। বাচ্চাদের অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম সম্বন্ধে আমরা প্রায় অনেকেই জানি।
আরো পড়ুন: গর্ভবতী মায়ের ফলমূল খাবার তালিকা
বাচ্চাকে প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার অলিভ অয়েল তেল দিয়ে মালিশ করে দিলে বাচ্চার ত্বক সুন্দর থাকে এবং বাচ্চার শরীর চাঙ্গা ও সতেজ হয়। এতে বাচ্চার ঘুম ও ভালো হয়। বাচ্চার গোসলের সময় চুল ও ত্বকের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে ভালো ব্রান্ডের বেবি লোশন এবং বেবি শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। গোসলের আগে অবশ্যই অলিভ অয়েল তেল অথবা সরিষার তেল দিয়ে বাচ্চাকে সুন্দরভাবে মালিশ করে নিন। শীতের সময় শিশুদের খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। তাই খাওয়া দাওয়ার দিকে বিশেষ যত্ন নিন।
৬ মাসের উপরে বয়সে শিশুদের দুধের পাশাপাশি তরল খাবার গুলো যেমন: সুজি, সাবু, সেরেলাক্র ইত্যাদি পুষ্টিকর খাবার গুলো খাওয়ালে বাচ্চার স্বাস্থ্য ও ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এক বছর বা তার বেশি বয়সে বাচ্চাদের মায়ের দুধের পাশাপাশি নরম খিচুড়ি শাকসবজি ও কিছু ফলমূল খাওয়ার দিকে গুরুত্ব দেন। খেয়াল রাখবেন শীতের সময় যেন বাচ্চা অধিক সময় ধরে বাইরে খেলাধুলা না করে। যতটুকু সময় খেলাধুলা করছে ততটুকু সময় তাকে হাত পা শুকনো রেখে খেলাধুলা করতে দিবেন।
শীতে নবজাতকের যত্নে করণীয়
শীতে নবজাতকের যত্নে করণীয় গুলোর মধ্যে প্রথম করণীয় হচ্ছে শীতকালে নবজাতকের মা ও অন্য যারাই বাচ্চাদের দেখাশোনা করবে তাদের বরাবর হাত ধুয়ে নিতে হবে। এতে শিশু কাছে রোগ জীবাণু কম আসে। নবজাতক শিশু যে ঘরে থাকে সে ঘরে যেন বেশি ঠান্ডা বাতাস না ঢুকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সব সময় ঘরটা গরম রাখার চেষ্টা করতে হবে। নবজাতককে গরম কিন্তু আরামদায়ক কাপড় পরাতে হবে। শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস গুলো স্বাস্থ্যসম্মত হতে হবে।
যাতে আপনার নবজাতক শিশু সব সময় সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে। গরমের সময় শিশুর জন্মের ৩ দিন পর থেকে শিশুকে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে বা গা মুছে দিতে হবে। কিন্তু শীতের সময় বাচ্চাকে একদিন পরপর গা মুছিয়ে দিলেও হবে। মনে রাখতে হবে শীতের সময় নবজাতক বাচ্চার শরীরে যেন ঠান্ডা পানি না লাগে। শীতে জন্ম হওয়া বাচ্চার দিকে পর্যাপ্ত পরিমাণ খেয়াল রাখতে হবে যেন বাচ্চার সর্দি কাশি জ্বর না হয়।
শিশুর ত্বক ফর্সা করার উপায়
শিশুর শরীর ও ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়। তাই শিশুর ত্বক ফর্সা করার উপায় সম্বন্ধে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। শিশুর সংবেদনশীল চামড়ার কথা মাথায় রেখে ঘরেয় সাবান, দুধ, হলুদ এবং গোলাপ জল দিয়ে বানান একটি বিশেষ স্ক্রাব। এছাড়াও চন্দন হলুদ জাফরান এবং দুধের সাথে বিশেষ একটি পেস্ট ও তৈরি করতে পারেন।
আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়ার উপকারিতা
এই মিশ্রণটি আপনার শিশুর ত্বক ফর্সা করার উপায় হিসেবে খুবই কার্যকারী। এটি ত্বকের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতেও সহায়তা করে। বাচ্চার নরম ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এই মিশ্রণটির জুড়ি মেলা ভার। বাঁচার ত্বক যাতে শুষ্ক না হয়ে পরে সেদিকেও খেয়াল রাখুন। বাঁচার জন্য ভালো মশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করুন।
বাচ্চাদের সরিষার তেল খাওয়ার উপকারিতা
প্রায় অধিকাংশ মায়েদের মনেই একটি প্রশ্ন থাকে বাচ্চাদের সরিষার তেল খাওয়ার উপকারিতা কি এবং কতটুকু? এমনকি অনেকে বাচ্চাদের সরিষার তেল খাওয়ার উপকারিতা সম্বন্ধে বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছেও পরামর্শ নিয়ে থাকেন। তাই শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস গুলির মধ্যে সরিষার তেলের গুরুত্বতা কম নেই। সেজন্য সব মায়েদের কথা মাথায় রেখে বাচ্চাদের সরিষার তেল খাওয়ার উপকারিতা সম্বন্ধে আলোচনা করতে যাচ্ছি।
সরিষার তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই থাকে। তাই বাচ্চাদের শরীরে জন্য সরিষার তেল খুবই উপযোগী। সরিষার তেল সূর্যের ক্ষতিকারক অতি বেগুনি রশ্নি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। তাই বাচ্চার শরীরে মালিশের জন্য সরিষার তেলের জুড়ি মেলা ভার। এমনকি বাচ্চা অসুস্থ হলে বাচ্চাকে সরিষার তেল খাওয়ানো শিশুর শরীরের জন্য উপকার।
তবে এক বছরের নিচে বাচ্চাদের এক চামচ পরিমাণ না খাইয়ে ড্রপে করে দুই থেকে তিন ফোটা খাওয়াতে হবে। এক বছরের উপরে বাচ্চাদের জন্য এক চামচ পরিমাণ সরিষার তেল খাওয়ানো যায়। সরিষার তেল ত্বকের ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে। সরিষার তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই থাকাই এ তেল ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। ত্বককে কোমল ও মসৃণ করতে সাহায্য করে।
বাচ্চাদের অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম
শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস গুলোর মধ্যে অলিভ অয়েল তেলের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। বাচ্চাদের অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম হলো বাচ্চাদের শরীরে মালিশ থেকে শুরু করে বাচ্চার খাবারের রান্নার কাজেও ব্যবহৃত হয়। অলিভ অয়েলের মধ্যে ভরপুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। অলিভ অয়েলের এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের এক্সিডেটিভ চাপ কমিয়ে দীর্ঘস্থায়ী রোগকে দূর করে। অলিভ অয়েলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-ই থাকে।
যা শিশুর শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। আপনার শিশুকে অলিভ অয়েল মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল করান। এতে শরীর নরম ও মসৃণ হয়। এক বালতি পানিতে ৫ টেবিল চামচ পরিমাণ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। আরো ভালো ফলাফল পেতে গোসলের পর ভেজা শরীরে বাচ্চার গায়ে অলিভ অয়েল তেল মালিশ করুন। এটা শিশুর ত্বকের জন্য ভালো মশ্চারাইজারের কাজ করবে।
অনেক শিশু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুসারে, আপনার ৬ মাস বয়সী শিশুর উদ্ভিজ্জ পিউড়িতে এক টেবিল চামচ অতিরিক্ত ভার্জিন অলিভ অয়েল এর সমপরিমাণ গ্রহণ করাতে পারেন। জলপাই তেল, অ্যাভোকাডো তেল, তিলের তেল এবং কুসুম তেল এসব স্বাস্থ্যকর রান্নার তেল যা উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। এ তেল শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষভাবে সহায়ক।
শেষ কথা
উপরে উক্ত আর্টিকেলে শীতে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার টিপস বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য নিয়ে আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম। আরো আলোচনা করলাম শীতে নবজাতকের যত্নে করণীয়, শিশুর ত্বক ফর্সা করার উপায়, বাচ্চাদের অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম ইত্যাদি বিষয় সম্বন্ধে। আশাকরি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছেন।
আজকের আর্টিকেলটি থেকে আপনি কতটুকু জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন আপনার মূল্যবান মন্তব্য শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর এমনই গুরুত্বপূর্ণ ও শিক্ষনীয় আর্টিকেল প্রতিদিন পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 26181
জানবো আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url