গাজা খেয়ে দুধ খেলে কি হয়- প্রথমবার গাঁজা খেলে কি হয়
প্রিয় পাঠক আপনি কি গাজা খেয়ে দুধ খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে গাজা খেয়ে দুধ খেলে কি হয় এবং প্রথমবার গাঁজা খেলে কি হয় সে সম্পর্কে আলোচনা করবে।
এছাড়া আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন গাজার নেশা কতখন থাকে এবং গাজা খাওয়া ছেড়ে দিলে কি হয় ও গাঁজা খেলে কি শরীর ৪০ দিন নাপাক থাকে সে সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোষ্টের দিকে আগানো যাক।
ভূমিকা
নেশাজাতীয় অনেক দ্রব্য রয়েছে সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে গাজা। মানুষ অনেক কারণে গাঁজা খায়। কেউ অভ্যাসবশত খেয়ে থাকে আর কেউ ভিন্ন কোন কারনে খায়। প্রথমবার গাঁজা খাওয়ার পরে মানুষের ভিতরে এক ভিন্নরকম অবস্থা কাজ করে। আস্তে আস্তে পরিবর্তন হতে থাকলে অবস্থার পরিবর্তন হয়।
গাজা খাওয়ার পরে খাবারের প্রতি মানুষের চাহিদা এমনিতেও বেশি থাকে। সেই হিসাব থেকে মানুষ অনেক রকমের খাবার খেয়ে থাকে ফলমূল ভাত আপেল দুধ।
গাঁজা খেলে কি শরীর ৪০ দিন নাপাক থাকে
আমাদের লোক সমাজে একটি কথা বহুল প্রচলিত রয়েছে যে গাঁজা খাওয়ার পরে 40 দিন পর্যন্ত শরীর নাপাক থাকে এবং এ অবস্থায় কোন রকমের কোন ধরনের ইবাদত কবুল হবে না। যারা এ কথা বলে বা এ কথার উপরে বিশ্বাসে তাদের বিশ্বাস একেবারেই ভুল। হাদিসের কোথাও একথার অস্তিত্ব নেই। একটা মানুষ নিশা জাতীয় দ্রব্য পান করার পরে সে যখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে
অর্থাৎ মানুষ নেশা জাতীয় দ্রব্য পান করার ফলে তাদের মস্তিষ্ক বিকৃত হয়ে যায় যেটাকে বলে তাদের মস্তিষ্কের উপরে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। যার কারণে ওই সময় ইবাদত নামাজ রোজা কোন কিছুই কবুল হবে না। আস্তে আস্তে যখন তার মস্তিষ্ক স্বাভাবিক হয়ে যাবে তখন থেকে তার ইবাদত কবুল হবে। এখন কেউ গাঁজা খাওয়ার পরে যদি কিছু সময় মস্তিষ্ক বিকৃত থাকে তাহলে
সেই সময় পর্যন্ত তার নামাজ হবে না। যখন মস্তিষ্ক ঠিক হয়ে যাবে তখনই সে নামাজ পড়তে পারবে। শুধু গাঁজা নয় সিগারেট আরো যেসব নেশা জাতীয় দ্রব্য রয়েছে কোন কিছু খাওয়ার কারণে 40 দিন পর্যন্ত শরীর নাপাক থাকে না। কোন ব্যক্তি নেশাদ্রব্য খাওয়ার পরে স্বাভাবিক হয়ে গেলে সে যেই ইবাদতী করবে না কেন তার ইবাদত কবুল করা হবে।
ইবাদত করার ক্ষেত্রে তার কোনো রকমের প্রতি সেখানে ধর্তব্য হবে না কারণ নেশা দ্রব্যের প্রভাব কেটে গেলে একটি মানুষের নামাজ ইবাদত সবকিছু কবুল করা হয়।
গাজা খেয়ে দুধ খেলে কি হয়
নেশা জাতীয় দ্রব্য কোনোভাবে পান করা খাওয়া উচিত নয়। আপনি যে অবস্থাতে খান না কেন তা আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর এবং ধর্মের দৃষ্টিকোণ থেকেও তা নিষিদ্ধ একটি কাজ। গাজা খাওয়ার পরে মানুষের ক্ষুধার পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি বেড়ে যায় যার কারণে মানুষ অনেক রকমের খাবার সেই সময় খেয়ে থাকে।
স্বাভাবিক অবস্থায় মানুষ যে পরিমাণ খাবার খেতে পারে গাজা খাওয়ার পরে মানুষ তার চেয়ে দ্বিগুণ খাবার খাওয়ার মত ক্ষমতা রাখে। গাজা খাওয়ার পরে কোন ব্যক্তি যদি ভালো খাবার খায় তাহলে তার শরীর উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে আরেকটি বিষয় হচ্ছে গাজার ভিতরে যে ক্ষতিকর উপকরণগুলো রয়েছে সেগুলো অবশ্যই আপনার শরীরের মধ্যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।
কোন ব্যক্তি যদি গাঁজা খাওয়ার পরে দুধ খায় তাহলে তার শরীরের জন্য অবশ্যই উপকার হবে। অনেক পরামর্শ করেছে যারা গাজা খাওয়ার পরে ভালো ফলমূল এবং দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেয় এতে করে শরীর উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যারা গাঁজা খান তাদের উচিত হবে গাঁজা খাওয়া ছেড়ে দেওয়া কারণ এটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
আপনার যদি তারপরও কোন কারনে বা অনিচ্ছাকৃত গাজা খাওয়া হয়ে যায় তাহলে গাজা খাওয়ার পরে অনেক ক্ষেত্রে গাজা খাওয়ার পরে দুধ খেলে তা সাইড ইফেক্ট হিসেবে দেখা দেয়। এতে করে মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ গাজার মধ্যে যেসব উপকরণ রয়েছে সেগুলো দুধের উপকরণের সাথে মিক্স হয়ে শরীরে একটা প্রভাব সৃষ্টি করে যার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
সব সময় চেষ্টা করতে হবে গাঁজা খাওয়া ছাড়া দুধ খাওয়ার তাহলে আপনি বেশি উপকৃত হতে পারবেন। যদি গাজা খাওয়ার পরেও দুধ খান তাহলে আপনি উপকৃত হতে পারবেন তবে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে গাজা খাওয়ার পরে দুধ বা অন্য কোন খাবারো পানিও গ্রহণ করলে রক্ত প্রবাহের THCখুশি তো হওয়ার হার
এবং এতে কত দ্রুত কার্যকর হয় তা প্রবাহিত করতে পারে এর কারণ হলো গাজা খাওয়ার পর খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করা THC এর শোষণকে ধীরগতি করে দিতে পারে এবং এর প্রভাব শুরু হতে কিছুটা দেরি হয়। গাজা খাওয়া একজন মানুষের জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকিত রয়েছে পাশাপাশি কোন কোমল পানীয় জাতীয় দ্রব্য সেবন করলে রক্তে এটার প্রভাব পড়তে পারে।
আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে গাজা খাওয়ার পরে যখন আপনার নেশা কেটে যাবে তখন দুধ খাওয়া।
প্রথমবার গাঁজা খেলে কি হয়
গাঁজা আপনি প্রথমবার খান বা শেষবার খান আপনার মধ্যে একটি পরিবর্তন আসবে এবং আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে গিয়ে তা বিকৃত হয়ে যাবে। এখানে একটি পার্থক্য আছে আপনি শুরুর দিকে গাজা অল্প খেলেও আপনার এক ধরনের নেশা হয়ে যাবে আর যখন তা অভ্যাসে পরিণত হবে অর্থাৎ পরবর্তীতে আপনি অল্প পরিমাণ গাঁজা খেলে তা আপনাকে সেভাবে প্রভাবিত করতে পারবে না।
যখন খাওয়ার পরিমাণ বেশি হবে তখনই সে গাঁজা আপনার মস্তিষ্কের উপরে প্রভাব ফেলতে পারবে।প্রথমবার গাঁজা খাওয়ার পরে মানুষ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি উল্টাপাল্টা কাজকাম শুরু করে।নিজের ওপরে কোনরকম কন্ট্রোল থাকে না। চোখে রক্ত জমা হয়ে চোখ লাল হয়ে যায়। ক্ষুধার পরিমাণ অনেক বেশি হারে বেড়ে যায়।
শরীরের মাংসপেশি শুকিয়ে যেতে শুরু করে। শরীর অত্যাধিক দুর্বল হয়ে যায়। হাত-পা কাঁপতে শুরু করে। গলা শুকিয়ে যায়। সবকিছু কল্পনা করতে ভালো লাগে এবং সবকিছু নিজে চোখের সামনে দেখা যায়। নিজের ভিতরে এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করে যার কারণে কোন কাজ করে বা শুয়ে থেকেও শান্তি পাওয়া যায় না। নিজেকে অনেক বড় রাজা মনে হয়।
মনে হবে আপনার মাথা দুইপাশ কেউ যেন বেঁধে রেখেছে। হাত পা চারিদিকে ছড়িয়ে যাবে হাত-পায়ে শক্তি কমে আসবে। চোখ আস্তে আস্তে ছোট হয়ে যেতে শুরু করবে। কোন ছোট জিনিসকে অনেক বড় এবং গভীর দেখাবে। ঠিকভাবে হাঁটাচলা করতে পারবে না। সাধারণত প্রথমবার গাঁজা খাওয়ার পরে এসব প্রভাব গুলো একজন মানুষের ভিতর দেখা যায়।
অনেক ক্ষেত্রে এসব প্রভাব গুলো দেখা না যেতেও পারে। প্রভাব মানুষের উপরে নির্ভর করে সম্পূর্ণ তার কন্ট্রোলের উপরে। যদি কেউ প্রথমবার হোক বা পরবর্তীতে হোক গাজা খাওয়ার পরে নিজের উপরে কন্ঠ রাখতে পারে এবং তা পরিমাপ মত খায় তাহলে তার উপরে প্রভাব অনেকটাই কম বিস্তার করবে। যখন অত্যাধিক মাত্রায় খাওয়া হয়ে যাবে তখন প্রভাবের মাত্ররাও অতিরিক্ত হয়ে যাবে।
এজন্য যারা প্রথমবার গাঁজা খাবেন চিন্তা করছেন তাদের জন্য উচিত হবে অল্প পরিমাণে খাওয়া অন্যথায় আপনার নিজের উপরে কোন রকমের আয়ত্ত থাকবে না এতে করে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিবে।
গাজার নেশা কতখন থাকে
গাজা খাওয়ার পর গাজান নেশা কতক্ষণ থাকে তার সম্পন্ন নির্ভর করে গাজার উপরে এবং মানুষদের উপরে ও খাওয়ার পরিমাণ কতটুকু থাকে তার ওপরে। যে ব্যক্তি গাঁজা খাচ্ছে তার যদি নিজের উপরে কন্ট্রোল থাকে তাহলে অনেক ক্ষেত্রে ২০-৩০ মিনিটের মধ্যে গাজার নেশা স্বাভাবিক হয়ে যায়। আবার অনেকে আছেন যারা খুব বেশি সময় না গেলে
স্বাভাবিক হতে পারে না যেমন ছয় ঘন্টা সাত ঘন্টা এমনকি ৮ ৯ ঘণ্টাও চলে যায় অনেকের ক্ষেত্রে। যদি গাজা খাওয়ার পরিমাণ কম হয় তাহলে অনেক ক্ষেত্রে খুব তাড়াতাড়ি গাঁজার নেশা কেটে যায় আর যদি খাওয়ার পরিমাণ অনেক বেশি থাকে তাহলে দীর্ঘ একটা সময় ধরে সেই নেশা থেকে যায়। অনেকে আছেন যারা অল্প পরিমাণ খাওয়ার পরও দীর্ঘ একটা সময় ধরে সেই নেশা থেকে যায়।
এ নেশা থাকার প্রথম কারণ হচ্ছে তার নিজের প্রতি নিজের আয়ত্ত না থাকা। অনেক ব্যক্তি আছে যারা প্রচুর পরিমাণ গাঁজা খাওয়ার পরও দিব্যি চলাফেরা করে এবং তাদের উপরে নেশা সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারে না অথবা প্রভাব ফেললেও তাদের নিজের উপরে কন্ট্রোল থাকার কারণে তা বাইরে প্রকাশ পায় না।
আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন গাজা খাওয়ার পরে একটি মানুষের উপরে গাজার আয়ত্ব কতক্ষণ থাকে।
গাজা খাওয়া ছেড়ে দিলে কি হয়
গাজা ছেড়ে দেওয়া অবশ্যই একটি ভালো কাজ। যখন আপনি গাঁজা ছেড়ে দেবেন তখন শারীরিকভাবে এবং মানসিকভাবে সুস্থ হতে শুরু করবেন। গাজা খাওয়ার ফলে মানসিকভাবে অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে যায় এবং শারীরিকভাবে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। যখন গাজা খাওয়া ছেড়ে দেবেন তখন আপনার শরীরে নতুন রক্ত জমাতে শুরু করবে
এবং পূর্বের রক্তগুলো পরিশোধন হবে এতে করে আপনার শরীরের আগের তুলনায় অনেক বেশি সুস্থ হতে শুরু করবে। যখন গাঁজা ছেড়ে দেওয়া হয় তারপর কিছুদিন সে পরিস্থিতিতে কাতে উঠতে কিছু সময়ের জটিলতা সম্মুখীন হতে হয় যেমন
- নিজের ভিতর অস্থিরতা প্রচুর পরিমাণে কাজ করবে। মন চাইবে একটু পরিমাণ গাঁজা খেলে হয়তো ভালো লাগবে। আপনি যদি এই পরিস্থিতি থেকে নিজেকে কাটিয়ে তুলতে পারেন এবং সেই সময়ে গাঁজা খাওয়া থেকে বিরত থাকেন তাহলে আপনার জন্য সামনের পথ অনেক সহজ হয়ে যাবে।
- নিজের ভিতরে এক রকমের দুশ্চিন্তা কাজ করবে। কোন কারণ ছাড়াই আপনি দুশ্চিন্তা করতে থাকবেন। দুশ্চিন্তা করতে না চাইলেও আপনার ভিতরে অকারনে দুশ্চিন্তা চলে আসবে।
- সাময়িকভাবে অসুস্থ হতে পারেন যেমন জ্বর সর্দি কাশী মাথাব্যথা এ সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে।
- ওজন হয়তো কমে যেতে পারে বা ওজন বেড়ে যেতে পারে। মোটকথা ওজনের ভেতরে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- ঠিকমতো ঘুম হবে না। ঘুম না হওয়ার পিছনে কারণ হচ্ছে গাজার প্রভাব থেকে যাওয়া গাঁজা খাওয়ার ফলে আপনার ঘুম ঠিক ভাবে হতো। যখন আপনি গাজা খাওয়া ছেড়ে দেবেন তখন কিছুদিন অর্থাৎ ২-৩ সপ্তাহ যাবত অনেক সমস্যা দেখা দিবে।
গাঁজা ছেড়ে দেয়ার কারণে যেসব সাময়িক সমস্যাগুলো বলা হলো এগুলো দুই থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত হয়ে থাকে। আপনি সেই সময় মন চাইবে গাজা খাইলে এই সমস্যাগুলো ভালো হয়ে যাবে আপনার উচিত হবে সেই সময় ঠিকভাবে পার করতে পারেন তাহলে সারা জীবনেও আর আপনার গাঁজা খাওয়ার প্রতি মন টানবে না এবং আপনি একেবারে সুস্থ সবল মানুষ হয়ে যাবেন।
গাঁজা ছেড়ে দেওয়ার শুরুর কিছুদিন আপনার জন্য অনেক বেশি কষ্টকর পরিস্থিতি তৈরি হবে এই পরিস্থিতিতে নিজেকে মানসিকভাবে শক্ত থাকলে আপনি এই পরিস্থিত দিতে পার করতে পারবেন এবং একটি সুন্দর জীবন পাবেন।
উপসংহার
গাঁজা খাওয়া কোনভাবে ভালো কাজ নয়। গাজা শরীরের জন্য এবং সমাজের জন্য অনেক বেশি ক্ষতি করে। এমনও মানুষ আছে যারা গাজা খাওয়ার কারণে পরিবারের প্রচুর পরিমাণ ঝামেলা করে এবং আস্তে আস্তে এই অশান্তি বাড়তে থাকে। তাই আপনি যদি গাজা খাওয়ার অভ্যাসে অভ্যস্ত থাকেন তাহলে অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসুন
এবং আপনার পরিচিত কেউ যদি এই অভ্যাসে অভ্যস্ত থাকে তাহলে তাকেও বের করে নিয়ে আসার চেষ্টা করুন এবং উভয়ে সবাই মিলে সুন্দর জীবন যাপন করুন।
জানবো আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url