ল্যাকটোজেন ২ খাওয়ার নিয়ম ও বানানোর নিয়ম- বয়স পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দাম

প্রিয় পাঠক আপনি কি ল্যাকটোজেন ২ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই পোস্টটি পোস্টটি আপনার জন্য। আমি এই পোষ্টের মধ্যে ল্যাকটোজেন ২ খাওয়ার নিয়ম এবং ল্যাকটোজেন ২ বানানোর নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব।
ল্যাকটোজেন ২ খাওয়ার নিয়ম
এছাড়াও আপনি এই পোষ্টের মধ্যে পাবেন ল্যাকটোজেন ২ খাওয়ার বয়স এবং ল্যাকটোজেন ২ এর দাম ও ল্যাকটোজেন ২ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে পোস্টের দিকে আগানো যাক। এই দুধ বাচ্চাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে যেসব বাচ্চারা তার মায়ের দুধ খেতে পারে না তাদেরকে দুধ খাওয়ানো হয়।

ল্যাকটোজেন ২ খাওয়ার বয়স

বাচ্চা দিনদিন বড় হতে থাকার কারণে তার শরীরে পুষ্টিগুণ এবং ভিটামিনের চাহিদা আরো বেশি হতে থাকে এর জন্য ৬ থেকে ১২ মাস বয়সের বাচ্চাদের জন্য ল্যাকটোজেন ২ তৈরি করা হয়েছে। এই দুধের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন ভিটামিন মিনারেল যেগুলোর প্রত্যেকটি একটি শিশুর জন্য অত্যন্ত জরুরী। এছাড়াও এই দুধের মধ্যে এমন কিছু গুণ রয়েছে যা একটি শিশুকে শারীরিক


এবং মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। এই দুধ এমন ভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে যা বাচ্চারা খুব মজার সাথে খেয়ে থাকে যার কারণে খুব সহজেই তারা সম্পূর্ণ দুধ খেয়ে নেয়। শূন্য থেকে ছয় মাস হওয়ার আগ পর্যন্ত বাচ্চার জন্য ল্যাকটোজেন 1 খাওয়ানো হয় আর বাচ্চার বয়স ৬ মাস যখন থেকে পূর্ণ হয় তখন থেকে ১২ মাস পর্যন্ত তাকে ল্যাকটোজেন ২ খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকে।

ল্যাকটোজেন ২ খাওয়ার নিয়ম

বাচ্চার বয়সের অনুপাতে প্রতি মাসে পানির পরিমাণ এর সাথে সাথে দুধের পরিমাণও বাড়তে থাকে। একটি বাচ্চা যখন বড় হয় তখন তার ক্ষুধার চাহিদাও বেশি হয় এবং শরীরে পুষ্টিগুণ অনেক বেশি দরকার হয় এজন্য প্রতি মাসে তার খাওয়ার নিয়ম পরিবর্তন হতে থাকে। শিশুর বয়স যখন ছয় এবং সাত মাস চলবে সেই সময় তাকে আট চামচ

পরিমাণ ল্যাকটোজেন ২ পানির সাথে মিশিয়ে পান করাবে। এভাবে যত বয়স বাড়তে থাকবে অর্থাৎ ৮ এবং ৯ নম্বর মাসে তাকে নয় চামচ করে ল্যাকটোজেন 2 পানির সাথে মিশিয়ে পান করাবে। একইভাবে ১০ এবং ১১ নম্বর মাসে চামচের পরিমাণ আরেকটি বেড়ে যাবে এবং 12 নম্বর মাসে আরেকটা চামচ বেড়ে যাবে।

বাচ্চাকে খাওয়ানোর সময় অবশ্যই তাড়াহুড়া না করে আস্তে ধীরে খাওয়াবেন যাতে করে সে আরামে খেতে পারে এবং দুধ বেধে যাওয়ার আশঙ্কা না থাকে অন্যথায় বাচ্চার জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে।

ল্যাকটোজেন ২ বানানোর নিয়ম

বাচ্চার জন্য দুধ বানানোর সময় আপনি যে ফিডারটি ব্যবহার করবেন সেটিকে অবশ্যই প্রথমে জীবাণুমুক্ত করে নিবেন। ফিডারটি জীবাণুমুক্ত করার জন্য আপনি গরম পানি দিয়ে একে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে পারেন। কারণ গরম পানি দিয়ে ফিডারটি পরিষ্কার করলে এটি সম্পূর্ণরূপে জীবাণু মুক্ত হয়ে যায়।

আপনার বাচ্চার জন্য ল্যাকটোজেন ২ বানানোর জন্য প্রথমেই পানি গরম করে নিবেন। তারপর গরম পানি একটি পাত্রে রেখে দিবেন যাতে করে সেটি শিশুর খাবার উপযোগী হয়ে ওঠে। অর্থাৎ শিশু খেতে পারে এমন তাপমাত্রা নিশ্চিত করতে হবে। ল্যাকটোজেন ২ খাওয়ানোর জন্য আপনি যে গরম পানি দিয়ে ব্যবহার করবেন সেটি যদি অতিরিক্ত গরম হয়ে থাকে


তাহলে এই গরম পানির কারণে আপনার শিশুর মুখ পুড়ে যেতে পারে। এর ফলে পরবর্তীতে শিশু কোন খাবারই খেতে চাইবে না।এরপর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বা ল্যাকটোজেন ২ এর প্যাকেটের গায়ে যে পরিমাণ পানির সাথে মিশাতে বলা হয়েছে সেই পরিমাণ দুধ মেপে নিন। এরপর পানির সাথে ল্যাকটোজেন ২ দুধ ভালো ভাবে মিশিয়ে নিবেন।
ল্যাকটোজেন ২ বানানোর নিয়ম
ল্যাকটোজেন ২ দুধ মেশানোর সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন এর মধ্যে কোন রূপ গুড়ো ভাব না থাকে। তা না হলে শিশুর গলায় দুধ বেধে যেতে পারে। তাই আপনার বাচ্চার জন্য যখনই দুধ বানাবেন তখন খুব ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিয়ে দুধটা শিশুকে খাওয়াবেন। এতে করে শিশুর কোন অসুবিধা হবে না।বাচ্চার জন্য দুধ বানানোর সময় ডাক্তারের

পরামর্শ অনুযায়ী বা ল্যাকটোজেন ২ এর প্যাকেটের গায়ে যে পরিমাণ দুধের কথা বলা হয়েছে তার চেয়ে বেশি বা কম দুধ মেশাবেন না। নির্দিষ্ট পরিমাণ দুধ না মিশানোর কারণে আপনার বাচ্চার ভিন্ন ধরনের যেমন বদহজম বা বমি হতে পারে। তাই সঠিক পরিমাণ দুধ মিশিয়ে আপনার বাচ্চাকে পান করাবেন।

ল্যাকটোজেন ২ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

মূলত ল্যাকটোজেন ২ এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। কারণ এটিকে এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে এবং এতে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য উপকারী। তবে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ঠিক তখনই দেখা দিবে যখন আপনি এটি এর সঠিক নিয়ম অনুযায়ী খাওয়াবেন না। আপনি যদি আপনার বাচ্চাকে


ল্যাকটোজেন ২ সঠিক নিয়মে না খাওয়ান এক্ষেত্রে আপনার বাচ্চার বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন বদহজম হওয়া, বমি হওয়া, কোন খাবার খেতে না যাওয়া বা অতিরিক্ত কান্না করা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আপনার উচিত হবে আপনার বাচ্চাকে ল্যাকটোজেন ২ সঠিক পরিমাণে ও সঠিক নিয়মে খাওয়ানো।

বাচ্চার জন্য ল্যাকটোজেন ২ ক্রয় করার সময় অবশ্যই এর উৎপাদনের তারিখ ও এর মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ পর্যবেক্ষণ করে নেবেন। মনে রাখবেন সঠিক নিয়মে আপনার বাচ্চাকে ল্যাকটোজেন ২ খাওয়ালে এটি আপনার বাচ্চার জন্য উপকারী হবে অন্যথায় এটি আপনার বাচ্চার ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ল্যাকটোজেন ২ এর দাম

বাংলাদেশে কয়েক ধরনের প্যাকেটে এবং কৌতায় ল্যাকটোজেন ২ পাওয়া যায় এবং প্রতিটি প্যাকেটের ওজন এবং দাম ভিন্ন ভিন্ন।
  • ১৮০ গ্রাম ল্যাকটোজেন ২ এর দাম ৩৪০ টাকা।
  • ৩৫০ গ্রাম ল্যাকটোজেন ২ এর দাম ৫১০ টাকা।
  • ৪০০ গ্রাম ল্যাকটোজেন ২ এর দাম ৭০০ টাকা।
  • ১ কেজি ৩০০ গ্রাম ল্যাকটোজেন ২ এর দাম ২৪৯০ টাকা। ১ কেজি ৮০০ গ্রাম এটি বাংলাদেশে তৈরি হয় না এটি সম্পূর্ণ মালয়েশিয়ান পণ্য। এটার দাম ৪ হাজার টাকা।

বাজারে এই কয়েক রকমের ল্যাকটোজেন ২ পাওয়া যায়। কেনার আগে অবশ্যই আপনি ভালোভাবে মেয়াদ দেখে নিবেন কারণ মেয়াদ যদি ঠিকমত না থাকে সেক্ষেত্রে বাচ্চার জীবন হুমকিতে পড়বে এবং কেনার ক্ষেত্রে আবারো একবার দাম ভালোভাবে দেখে নিবেন।

ল্যাকটোজেন ২ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর - FAQ

Lactogen 2 কখন খাওয়া উচিত?
বাচ্চার বয়স ছয় মাস পরিপূর্ণ হওয়ার পর থেকে তাদেরকে ল্যাকটোজেন ২ খাওয়ানো যাবে। ল্যাকটোজেন ২ তৈরি করা হয়েছে 6 থেকে 12 মাস বয়সের বাচ্চাদের জন্য। বাচ্চার বয়স 6 মাস আগে কখনোই তাদেরকে এই দুধ খাওয়াবেন না।

২ মাসের বাচ্চার জন্য কোন ল্যাকটোজেন ভালো?
দুই মাস বয়সী বাচ্চাদেরকে ল্যাকটোজেন এক খাওয়াতে হবে।  ল্যাকটোজেন এক ল্যাকটোজেন 1 শূন্য থেকে ছয় মাস বয়সের বাচ্চাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।

শিশুর ল্যাকটোজেন দুধ কিভাবে তৈরি করব?
শিশুর বয়সের উপর নির্ভর করে সেই পরিমাণ পানি এবং দুধ নিতে হবে। তারপর তা একসাথে ভালোভাবে মিক্স করবেন। পানি নেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই কুসুম গরম পানি নিতে হবে। ঠান্ডা হলে দুধ সেখানে ভালোভাবে মিক্স হবে না আর গরম হলে বাচ্চা ঠিকভাবে খেতে পারবে না।

শিশুর দুধে ল্যাকটোজেন কতটা ভালো?
ডাক্তাররা এ দুধ খাওয়ানোর জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকে। পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশে এই দুধ ব্যাপক হারে চলে। বড় বড় বিশেষজ্ঞরা মায়ের দুধের বিকল্প হিসেবে এ দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেয়।

ল্যাকটোজেন কি শিশুর জন্য ক্ষতিকর?
একটি শিশুর জন্য কখনোই ক্ষতি করে না। শিশুর শরীরের দিকে লক্ষ্য রেখে এই দুধ বানানো হয়। অনেক সময় কিছু কিছু শিশুর পেটে এ দুধ হজম হয় না যার কারণে পেটব্যথা করে বা বমি হয়ে যায় অথবা পাতলা পায়খানার মতো সমস্যা দেখা দেয়। যদি আপনার বাচ্চার সমস্যা দেখা দেয় তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে দুধ পরিবর্তন করে নেবেন।

উপসংহার

বাচ্চাকে পেটে দুধ খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে। ডাক্তার যদি খাওয়ানোর অনুমতি দেয় তাহলে খাওয়াবেন অন্যথায় নিজে থেকে খাওয়াতে গেলে আপনার বাচ্চা সমস্যা হতে পারে। তাই আপনার বাচ্চাকে নিরাপদ রাখতে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জানবো আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

dfsfsdfdg