তোতাপুরি ছাগল চেনার উপায়- তোতাপুরি ছাগলের বাচ্চার দাম কত- পালন পদ্ধতি
প্রিয় পাঠক , আপনি কি তোতাপুরি ছাগল পালন পদ্ধতি ও তোতাপুরি ছাগলের বাচ্চার দাম কত এই সম্পর্কে জানতে চান ? তাহলে আজকের এই ব্লগ পোস্টটি আপনার জন্য। তো চলুন আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে শুরু করা যাক আমাদের আলোচনার মূল আলোচ্য বিষয় তোতাপুরি ছাগল সম্পর্কে সকল তথ্য বিস্তারিত।
আমার আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি জানতে পারবেন তোতাপুরি ছাগল পালন পদ্ধতি ও তোতাপুরি ছাগলের বাচ্চার দাম কত এই সম্পর্কে বিস্তারিত। এজন্য আজকের আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত সকল তথ্য নির্মূল ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য এই পোস্টটি সম্পূর্ণভাবে পড়া বাধ্যতামূল।
তোতাপুরি ছাগল পালন পদ্ধতি
যারা নতুন করে তোতাপুরি ছাগল লালন পালন করছেন তারা তোতাপুরি ছাগল পালন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চেয়ে থাকেন। তাদের উদ্দেশ্যে আজকের এই আর্টিকেলে তোতাপুরি ছাগল পালন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হবে। যারা নতুন ভাবে তোতাপুরি ছাগল পালন করছেন তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি খুবই সহায়ক হবে।
তোতাপুরি ছাগল পালনের জন্য উঁচু একটি মাচা তৈরি করতে হবে। যেখানে বৃষ্টির পানি পড়বে না এবং বৃষ্টির পানিতে সেই মাচাটি ভিজবে না। আপনারা ইচ্ছা করলে মাচাটি বাঁশ বা কাঠ যেকোন একটি দিয়ে তৈরি করতে পারেন। এক্ষেত্রে তল্লা বাঁশ দিয়ে তৈরি করা সহায়ক। কারণ তল্লা বাঁশের দাম তুলনামূলক অন্যান্য বাঁশের চেয়ে কম এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই।
তোতাপুরি ছাগল দলবদ্ধ ভাবে থাকতে পছন্দ করে। এজন্য আপনি যদি ব্যবসায় উদ্দ্যেশে তোতাপুরি ছাগল পালন করতে ইচ্ছুক হন তাহলে আপনি কয়েকটি তোতাপুরি ছাগল একসাথে পালন করবেন। এতে আপনার যেমনি খরচ কম পড়বে তার সাথে তোতাপুরি ছাগলের বৃদ্ধি দ্রুত হবে। তোতাপুরি ছাগলের যারা নতুন উদ্যোক্তা তাদের এটি করা উচিত।
তোতাপুরি ছাগল আলো বাতাসে অতিরিক্ত বেড়ে ওঠে। এজন্য তাদের প্রতিদিন কমপক্ষে একবার মাচা থেকে বাহিরে বের করে খোলা মাঠে ছেড়ে রাখতে হবে। যাতে তাদের দৈহিক বৃদ্ধি এবং শারীরিক পরিশ্রম হয়। কারণ তোতাপুরি ছাগলের জাত খোলা বাতাসে থাকতে পছন্দ করে। কিন্তু তাদের রোগবালাই থেকে মুক্ত রাখতে মাচা তৈরি করে তাতে রাখা হয়।
সাধারণ তোতাপুরি ছাগল বদ্ধ পরিবেশে থাকতে পছন্দ করে না। এক্ষেত্রে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে তোতাপুরি ছাগলের গলায় কোন দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা যাবে না। এতে তাদের শারীরিক বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য তাদের সব সময় দড়ি বা রশি দিয়ে গলায় বাধা থেকে বিরত রাখতে হবে। যাতে ছাগলের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি অবহিত থাকে।
ছাগলকে অন্যান্য জাতের ছাগলের সাথে মিশতে দেওয়া যাবে না বা একই মাচাতে রাখা যাবে না। কারণ অন্যান্য জাতের ছাগলের তুলনায় তোতাপুরি ছাগলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভিন্ন প্রকৃতির হয়ে থাকে। এজন্য তোতাপুরি ছাগল পালনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যাতে এ জাতের ছাগলের কোন প্রকার ক্ষতির সম্ভাবনা না থাকে।
তোতাপুরি ছাগলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যান্য জাতের ছাগলের তুলনায় সামান্য বেশি হয়ে থাকে। এজন্য এ জাতের ছাগলের পানির তৃষ্ণার্ততা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এছাড়া তোতাপুরি ছাগলের রোগ ব্যাধি খুব কম হয়। তোতাপুরি ছাগলের শুধুমাত্র দুইটি রোগ বেশি দেখা যায়। সে দুটি রোগ হল সর্দি জ্বর ও পেটের কৃমি।
বর্তমানে পশু অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত পশু চিকিৎসক কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বিশেষ কিছু ভ্যাকসিন রয়েছে যেগুলো জাত ভেদে প্রদান করা হয়ে থাকে। এজন্য তোতাপুরি ছাগলের রোগবালাই এর জন্য পশু অধিদপ্তর কর্তৃক নির্দেশিত নির্দিষ্ট ভ্যাকসিনটি প্রদান করলে সকল ধরনের রোগ বালাই থেকে তোতাপুরি ছাগলকে রক্ষা করা সম্ভব হয়।
বাংলাদেশের একমাত্র ছাগলের জাত তোতাপুরি যে জাতের ছাগল প্রায় সকল ধরনের খাবার খেয়ে থাকে। এ জাতের ছাগল সাধারণত কাঁচা ঘাসের মধ্যে নেপিয়ার সবথেকে বেশি পছন্দ করে থাকে। এজন্য যত সম্ভব পারা যায় আলাদা ভাবে নেপিয়ার ঘাস চাষ করে তোতাপুরী ছাগলদের খাওয়ানো। এছাড়া ভাদাল ও অন্যান্য সকল জাতের ঘাস তাদের খুবই প্রিয়।
তোতাপুরি জাতের ছাগল কাঁচা ঘাস বাদেও অন্যান্য সকল প্রকার খাবার খেয়ে থাকে। কাঁচা ঘাসের পরে তাদের প্রধান পছন্দের খাবার হল গমের ভুষির । গমের ভুষির সাথে হালকা পরিমাণ ভুট্টার আটা ও ধানের গোড়া মিশিয়ে তরল করে খাওয়ালে তোতাপুরি ছাগল দ্রুত শারীরিক বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়।
এছাড়া তোতাপুরি ছাগলের অতিরিক্ত বৃদ্ধির জন্য আপনারা দানাদার বিভিন্ন খাদ্য, ভাত , ভাতের খুদ , তিসির খৈল , ধানের আওড় সংযুক্ত করে খাওয়াতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাদের তোতাপুরি ছাগলের অতিরিক্ত বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অবশ্যই মনে তোতাপুরি ছাগলকে রাসায়নিক কেমিক্যাল বা ইনজেকশন দিয়ে মোটাতাজা করার চেষ্টা করবেন না।
তোতাপুরি ছাগলের জাত সাধারণত আরাম প্রিয় হয়ে থাকে। এজন্যই গরমের সময় এদের জন্য ফ্যানের ব্যবস্থা রাখা উচিত ও শীতের সময় শীত নিবারণ বস্ত্র পরিধান করিয়ে দেওয়া উচিত। এতে গরমের সময় ও শীতের সময় যেসব রোগব্যাধি হয়ে থাকে তা থেকে অগ্রিম মুক্তি পাওয়া যায়। এজন্য সকল উদ্যোক্তাকে এ বিষয়ে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে।
যেহেতু তোতাপুরি ছাগল একটু আকর্ষণীয় হয়ে থাকে তাদের কানের জন্য। কারণ অন্যান্য জাতের ছাগলের তুলনায় তোতাপুরি জাতের ছাগলের কান একটু লম্বা হয়ে থাকে। এজন্য এ জাতের ছাগলের সৌন্দর্য অন্যান্য ছাগলের তুলনায় বেশি হয়েছে। এছাড়া এ জাতের ছাগলের দৈর্ঘ্য - প্রস্থ , উচ্চতা ও ওজন অন্যান্য জাতের ছাগলের তুলনায় বেশি হয়।
এজন্য এ জাতের ছাগলের চাহিদা অন্যান্য জাতের ছাগলের তুলনায় অনেক বেশি। যার কারণে তোতাপুরী ছাগল কিনতে গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। তাই লাভজনক ব্যবসা হিসেবে তোতাপুরী ছাগল পালন একটি ভালো মাধ্যম। যেখানে অল্প পুজিতে অধিক টাকা আয় করা সম্ভব। এজন্য উপরে বর্ণিত তোতাপরি ছাগল পালন পদ্ধতি অনুসরণ করা আবশ্যক।
তোতাপুরি ছাগলের বাচ্চার দাম
যেহেতু তোতাপুরি ছাগল অন্যান্য জাতের ছাগলের তুলনায় দেখতে সুন্দর, কান বড়, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ বেশি, উচ্চতা বেশি ও ওজন বেশি হয়ে থাকে এজন্য তোতা পরী ছাগলের দাম অন্যান্য জাতের ছাগলের তুলনায় সামান্য বেশি হয়ে থাকে। কারণ উপরোক্ত সকল গুণের কারণে তোতাপুরী ছাগলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এজন্য এ জাতের ছাগলের দাম বেশি।
তোতাপুরি ছাগলের বাচ্চার দাম বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। এটি তোতাপুরি ছাগলের বাচ্চার আমদানির উপরে নির্ভর করে থাকে। তোতাপুরি ছাগলের বাচ্চার বয়সের ওপরে নির্ভর করে ছাগলের দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক তোতাপুরি ছাগলের বাচ্চার দাম সম্পর্কে সকল তথ্য নির্ভুলভাবে।
- তোতাপুরি ছাগলের ১ - ২ মাসের বাচ্চার দাম পাঁচ থেকে আট হাজার টাকা
- তোতাপুরি ছাগলের ২ - ৩ মাসের বাচ্চার দাম ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা।
- তোতাপুরি ছাগলের ৩ - ৬ মাসের বাচ্চার দাম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
- তোতাপুরি ছাগলের ৬ মাস - ১ বছরের বাচ্চার দাম ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।
এছাড়া একটি পূর্ণবয়স্ক তোতাপুরি ছাগলের দাম ৫০ হাজার টাকা শুরু করে সর্বোচ্চ লক্ষাধিক টাকা হতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের কোরবানির ঈদে ব্যাপক দামে বিক্রি হয়ে থাকে তোতাপুরি জাতের ছাগলগুলো। পাকিস্তানের একটি তোতাপুরি ছাগল ৫২ লক্ষ টাকা দামে বিক্রি করা হয়েছিল। এছাড়া পৃথিবীর ইতিহাসে তোতাপুরি ছাগল কোটি টাকা দামেও বিক্রি করা হয়েছে।
তোতাপুরি ছাগল চেনার উপায়
বর্তমানে যারা নতুন ব্যবসায়ী বা তোতাপুরি ছাগল পালনের জন্য উদ্যোক্তা হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এটি একটি কমন প্রশ্ন। তোতাপুরি ছাগল চেনার উপায় সম্পর্কে কিছু কার্যকর পদ্ধতি যার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজে তোতাপরি ছাগল চিনতে পারবেন।
এক ধরনের পাখি রয়েছে যে পাখির জাতের নাম তোতাপুরি । এ জাতের পাখিদের মুখ একটু লম্বা হয়ে থাকে। এই পাখিদের জাতের কথা মাথায় রেখে তোতাপুরি ছাগলের জাতের নাম রাখা হয়েছে। এজন্য বুঝতে পারছেন তোতাপুরি জাতের ছাগলের মুখ হালকা লম্বা হয়ে থাকে অন্যান্য জাতের ছাগলের তুলনায়।
কান লম্বা , জিহ্বা লম্বা , চোখ টানা টানা , দৈর্ঘ্য - প্রস্থ বেশি , উচ্চতা বেশি , ওজন বেশি , চামড়ায় একাধিক রং থাকে , মাথা ও কোমর উঁচু এবং পিঠের দেখে হালকা নিচে থাকে , গলা মোটা , পায়ের নিচের দিকে অতিরিক্ত কিছু পশম থাকে , বছরে দুইটি করি বাচ্চা প্রসব করে , মাথায় শিং থাকেনা , ওজন সাধারণত ৫০ কেজি থেকে ১৫০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
উপরোক্ত সকল গুণের কারণে ক্রেতারা তোতাপুরি ছাগলের প্রতি বেশি আসক্ত হয়। কারণ তোতাপুরি জাতের ছাগলের গুণ অন্যান্য জাতের ছাগলের তুলনায় একটু ব্যতিক্রম হয়ে থাকে যার ফলে এ জাতের ছাগল ক্রেতাদের আলাদা নজর কেড়েছে। আশা করি আপনারা তোতাপুরি ছাগল চেনার উপায় বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
তোতাপুরি ছাগল কোথায় পাওয়া যায়
আগে তোতাপুরি ছাগল খুব একটা দেখা যেত না। কিন্তু বর্তমানে পশু অধিদপ্তর কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত পশুর সুরক্ষা আইন নীতিমালা অনুসারে সুরক্ষা খামার প্রকল্প বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে তোতাপুরি ছাগল আলাদাভাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য তোতাপুরি ছাগলের উৎপাদন আগের তুলনায় ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পুরো পৃথিবীর মধ্যে সর্বপ্রথম ভারতের রাজস্থানে এই তোতাপুরি ছাগলের জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে তোতাপুরি ছাগলের কৃত্রিম প্রজনন ঘটানোর কারণে সমস্ত পৃথিবীতে এই ছাগলের ব্যাপ্তি ঘটেছে। তোতাপুরী ছাগলের মাংসের জন্য বিশ্বব্যাপী তোতাপুরি ছাগলের আলাদা চাহিদা রয়েছে। এ জাতের ছাগলের মাংসের স্বাদের কারণে নজর কেড়েছে বিশ্বব্যাপীর।
সমস্ত বাংলাদেশের মধ্যে মধ্য পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলাতে তোতাপুরি ছাগলের উৎপত্তি বেশি দেখা যায়। তবে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেক জেলাতেই এ ছাগল বিদ্যমান। কারণ তোতাপুরি ছাগলের মাংসের অমৃত স্বাদের কারণে বাংলাদেশব্যাপী এই ছাগলের বিশেষ চাহিদা রয়েছে। এর কারণে তোতাপুরি ছাগলে দাম ও বেশি।
এছাড়া আপনি যদি ব্যবসায়ী উদ্দেশ্যে তোতাপুরি জাতের ছাগল একাধিক ক্রয় করতে চান তাহলে রাজশাহীর ভদ্রার মোড়ে অথবা ঢাকার কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে ক্রয় করতে পারেন। তবে অবশ্যই বিশ্বস্ত জায়গা থেকে তোতাপুরি জাতের ছাগল ক্রয় করবেন। যাতে ভবিষ্যতে প্রতারিত না হতে হয় এবং সুরক্ষিত একটি খামার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেন।
ব্যক্তিগত মতামত
আপনারা ইচ্ছা করলে তোতাপুরি ছাগল চেনার উপায় ও তোতাপুরি ছাগলের বাচ্চার দাম জেনে তোতাপুরি জাতের ছাগলের খামার করে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারেন। রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলার বিদেশ প্রবাসী কামরুল হাসান তোতাপুরি জাতের ছাগল পালন করে প্রতিমাসে ৩ লক্ষ টাকা আয় করে। বর্তমানে তিনি একজন সফল ও সাবলম্বী ব্যবসায়ী। আপনারা চাইলে বসে না থেকে উদ্যোক্তা হয়ে এই অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসাটি করতে পারেন।
জানবো আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url