সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়া যায়- ৬ মাসের বাচ্চার সেরেলাক ২০২৪- সেরেলাক কোনটা ভালো

আপনি কি ৬ মাসের বাচ্চার সেরেলাক কোনটি ভাল এবং সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়া যায় জানতে চান? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আজকের এই আর্টিকেলে এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়তে থাকুন।
সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়া যায় ও ৬ মাসের বাচ্চার সেরেলাক
সেরেলাক শিশুদের মায়ের দুধের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুষ্টির জন্য খাওয়ানো হয়। তবে মায়ের দুধেরই রয়েছে সর্বাধিক পুষ্টিগুণ। কিন্তু যেহেতু আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল আলোচ্য বিষয় সেরেলাক দুধ সম্পর্কে তাই আজকের এই আর্টিকেলে সেরেলাক দুধ বিষয়ে আলোচনা হবে।

সেরেলাক কোনটা ভালো

বাজারে অনেক ধরনের সেরেলাক রয়েছে। তবে আপনার জন্য কোন সেরেলাক ভালো হবে তা আপনার বাজেট এবং আপনার শিশুর পছন্দের উপর নির্ভর করে। ধান ভিত্তিক সেরেলাক সবচেয়ে সাধারণ ধরনের সেরেলাক এবং এটি চাল দিয়ে তৈরি। এটি ভিটামিন এবং খনিজ দিয়ে সমৃদ্ধ এবং এটি শিশুদের জন্য পুষ্টির একটি ভাল উৎস।

গম ভিত্তিক সেরেলাক গম দিয়ে তৈরি এবং এটি প্রোটিনের ভাল উৎস। এটি ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ। ওটস ভিত্তিক সেরেলাক ওটস দিয়ে তৈরি এবং এটি ফাইবারের ভাল উৎস। এটির মধ্যে ভিটামিন এবং খনিজও রয়েছে। মাল্টি গ্রেইন সেরেলাক বিভিন্ন ধরণের শস্য দিয়ে তৈরি যার মধ্যে রয়েছে গম, চাল এবং ওটস। এটি প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজগুলির ভাল উৎস।

ফলের সেরেলাক ফল দিয়ে তৈরি এবং এটি ভিটামিন এবং মিনারেলের ভালো উৎস। এটি শিশুদের জন্য একটি মিষ্টি এবং সুস্বাদু খাবার। আপনার শিশুর জন্য কোন ধরনের সেরেলাক সবচেয়ে ভালো তা নির্ভর করে তাদের বয়স, পুষ্টির চাহিদা এবং খাদ্যের পছন্দের উপর। ৬ মাসের কম বয়সী শিশুদের জন্য ধান ভিত্তিক সেরেলাক সবচেয়ে ভালো। ৬ মাসের বেশি বয়সী শিশুদের অন্য সেরেলাক খাওয়াতে পারেন।

সেরেলাক এর উপকারিতা ও অপকারিতা

সেরেলাক এর অনেক উপকারিতা রয়েছে যা নিচে উল্লেখ করা হবে। তবে এর বেশ কিছু অপকারিতাও রয়েছে। যদি আপনি চিকিৎসকের নির্দেশনা ব্যতীত আপনার শিশুকে অতিরিক্ত মাত্রায় সেরেলাক খাওয়ার তাহলে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। তো চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত দৃষ্টিপাত করা যাক যাতে আপনি এর উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে পারেন।

সেরেলাক ভিটামিন, খনিজ, এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ যা শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশে সাহায্য করে। অর্থাৎ সেরেলাক একটি পুষ্টির উৎস হিসাবে কাজ করবে যদি আপনার শিশুকে এটি খাওয়ান। সেরেলাক হজমে সহজ এবং শিশুর পেটের জন্য ভালো। তাই আপনি চাইলেই আপনার শিশুকে এটি খাওয়াতে পারেন তবে খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করবেন।

এটি বিভিন্ন স্বাদে পাওয়া যায় তাই আপনি চাইলে আপনার শিশুর পছন্দ অনুসারে এটি খাওয়াতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার শিশু যদি ধান ভিত্তিক সেরেলাক না খেতে চাই তাহলে তাকে গম ভিত্তিক সেরেলাক হতে পারবেন। আবার আপনার শিশু যদি গম ভিত্তিক সেরেলাক খেতে না চায় তাহলে তাকে ওটস ভিত্তিক সেরেলাক খাওয়াতে পারবেন। অর্থাৎ এখানে আপনার শিশুর পছন্দের অবকাশ রয়েছে।

শিশুদের খাওয়ানোর জন্য সেরেলাক তৈরি করা খুবই সহজ তাই যেকোন শিশুকে যদি সেরেলাক খাওয়ানো হয় তাহলে তার অভিভাবকদের সময় অনেক বেঁচে যায়। অর্থাৎ আপনি যদি অল্প সময়ের মধ্যে আপনার শিশুকে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কোন খাবার খাওয়াতে চান তাহলে সেরেলাক খাওয়াতে পারেন। কারণ এটি তৈরি করা এবং শিশুকে খাওয়ানো খুবই সহজ।

তবে সেরেলাক এর কিছু অপকারিতা রয়েছে। কিছু শিশুকে সেরেলাক খাওয়ানোর ফলে এলার্জি দেখা দিতে পারে। আবার অতিরিক্ত সেরেলাক খাওয়ানোর ফলে আপনার শিশুর ওজন অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এজন্য আপনার শিশুকে সেরেলাক খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন যাতে ভবিষ্যতে কোন ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশের সম্মুখীন হতে না হয়।

সেরেলাক শিশুর প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি সরবরাহ করে না তাই আপনার শিশুর পুষ্টিমান বৃদ্ধি করার জন্য শুধুমাত্র সেরেলাক এর ওপরে নির্ভরশীল থাকবেন না। সেরেলাক খাওয়ানের পাশাপাশি আপনার শিশুকে বিভিন্ন সুষম খাবার খাওয়ান। তবে মধ্যবিত্ত পরিবারের শিশুদের সেরেলাক না খাওয়ানোই উত্তম কারণ অন্যান্য খাবারের তুলনায় এর বেশি একটু দামি। তবে সামর্থ্য থাকলে খাওয়াতে পারেন।

সেরেলাক কত মাস থেকে খাওয়ানো যায়

চিকিৎসকেরা সাধারণত শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হওয়ার পরে সেরেলাক খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকে। তবে অনেক সময় ৬ মাস পূর্ণ হওয়ার আগেও খাওয়ানো যেতে পারে তবে এক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্ত রয়েছে। আপনার শিশু যদি তার মায়ের বুকের দুধ ঠিকমত না পায় সেক্ষেত্রে অনেক চিকিৎসকেরা আপনার শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই সেরেলাক খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত দিতে পারে।

সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়া যায়

তবে আমার ব্যক্তিগত পরামর্শ থাকবে আপনি আপনার শিশুকে সেরেলাক খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুসারে আপনার শিশুর সমস্ত শরীর চেকআপ করাবেন। কারণ আপনার শিশুর শারীরিক পরিস্থিতি এবং খাবার চাহিদা অনুসারে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক আপনার শিশুকে দিনে কতবার সেরেলাক খাওয়াতে হবে তা নির্ধারণ করবেন।

সাধারণভাবে আপনার শিশুর বয়স যদি ৬ মাস থেকে ৮ মাস হয়ে থাকে তাহলে আপনার শিশুকে দিনে একবার সেরেলাক খাওয়াবেন। আপনার শিশুর বয়স যদি ৯ মাস থেকে ১১ মাস হয়ে থাকে তাহলে আপনার শিশুকে দিনে ২ বার সেরেলাক খাওয়াবেন এবং আপনার শিশুর বয়স যদি ১ বছর থেকে ২ বছর হয়ে থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে দিনে ২-৩ বার সেরেলাক খাওয়ানো যেতে পারে।

আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন আপনার ছোট্ট সোনামণিকে দিনে কতবার সেরেলাক খাওয়াতে হবে। তবে আপনার শিশুর শরীরের পুষ্টিগুণ শুধুমাত্র সেরেলাক এর ওপরে নির্ভর করবে না তাই
আপনার শিশুকে সেরেলাকের পাশাপাশি অন্যান্য প্রাকৃতিক এবং সুষম খাবার খাওয়াবেন যাতে আপনার শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বৃদ্ধি স্বাভাবিক থাকে।

সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়ানো যাবে তা নির্ভর করে আপনার শিশুর বয়স, পুষ্টির চাহিদা এবং খাওয়ার অভ্যাসের উপর। তবে আপনার সুবিধার্থে আমাদের আর্টিকেলের এই অংশে সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়া যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনি এই বিষয়ে সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে বুঝতে পেরেছেন।

৬ মাসের বাচ্চার সেরেলাক

আর্টিকেলের এই অংশে ৬ মাসের বাচ্চার জন্য কোন সেরেলাক ভালো হবে এবং কিভাবে আপনি এটি তৈরি করে শিশুকে খাওয়াবেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক এই সম্পর্কে সকল তথ্য বিস্তারিত। আশা করি আর্টিকেলের এই অংশটুকু আপনি যদি পড়তে পারেন তাহলে আপনি নিজে নিজেই আপনার বাচ্চার জন্য সেরেলাক তৈরি করতে পারবেন।

সেরেলাক তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো হলোঃ ২ চা চামচ সেরেলাক, ৪ টেবিল চামচ গরম পানি/দুধ, একটি ছোট পাত্র এবং একটি চামচ। পাত্রটি পরিষ্কার করে ধুয়ে পাত্রে গরম পানি/দুধ ঢালুন। এরপর পানি/দুধ ফুটে উঠলে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন এবং সেরেলাক পানিতে/দুধে ধীরে ধীরে ঢেলে দিন। তারপর চামচ দিয়ে সেরেলাক ভালো করে নাড়তে থাকুন যাতে কোনও দলা না থাকে।

সেরেলাক ঘন হয়ে আসা পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। উপরোক্ত প্রক্রিয়াগুলো সঠিকভাবে পালন করার পরে সেরেলাক ঠান্ডা করে শিশুকে খাওয়ান এবং সেরেলাক খাওয়ানোর পর শিশুকে পানি পান করান। মনে রাখবেন কোন অবস্থাতেই গরম সেরেলাক আপনার শিশুকে খাওয়াবেন না। তবে ৬ মাসের বাচ্চার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার হল মায়ের দুধ, কারণ এটি সৃষ্টিকর্তা কতৃক প্রদত্ত।

১০ মাসের বাচ্চার সেরেলাক

আপনার বাচ্চার বয়স যদি ১০ মাস হয় তাহলেও আপনি আপনার বাচ্চাকে সেরেলাক খাওয়াতে পারবেন। তবে কতটুক পরিমানে সেরেলাক খাওয়াবেন তা নির্ধারণের জন্য একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। কারণ একজন চিকিৎসক আপনার বাচ্চার শারীরিক পরিস্থিতি এবং খাবার চাহিদার উপর নির্ভর করে সেরেলাক খাওয়ানোর নির্দেশনা দিবেন।

সেরেলাক এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

অনেকে সেরেলাককে শুধু পুষ্টিকর খাবার বলেই জানে কিন্তু সেরেলাকেও সামান্য কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। কোন শিশুর যদি গম, দুধ, বা সয়ার প্রতি অতিরিক্ত এলার্জি থাকে তাহলে সেসব শিশুকে সেরেলাক খাওয়াবেন না। কারণ সেরেলাকের উপাদানের মধ্যে এগুলো রয়েছে। আবার কিছু শিশুকে সেরেলাক খাওয়ানোর পরে বদহজমের বিভিন্ন লক্ষণ যেমনঃ পেট খারাপ, গ্যাস, এবং ডায়রিয়া হতে পারে।

তাই আপনার শিশুকে সেরেলাক খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন না হলে ভবিষ্যতে বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। এজন্য এই বিষয়ে অবশ্যই সচেতনতা অবলম্বন করবেন। তবে শিশুকে ৬ মাসের আগে সেরেলাক খাওয়াবেন না আর মনে রাখবেন সেরেলাক কখনো মায়ের দুধের বিকল্প হতে পারে না।

সেরেলাক ১ এর দাম

সেরেলাক ১ এর দাম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে, তাই স্থায়ীভাবে দাম বলা সম্ভব নয়। তবে বর্তমানে সেরেলাক ১ এর দাম ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। এটি আপনি যেকোন ফার্মেসি কিংবা অনলাইন শপ থেকে সহজেই ক্রয় করতে পারবেন। তবে এটি ক্রয় করার সময় অবশ্যই সেরেলাক ১ প্যাকেটের গায়ে দেওয়া QR কোড স্ক্যান করে যাচাই করবেন এবং মেয়াদ রয়েছে কিনা তা দেখে নিবেন।

শেষ কথা

আজকের এই আর্টিকেলে সেরেলাক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি অবশ্যই উপকৃত হয়েছেন। আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আর্টিকেল প্রকাশিত হয়। তাই এই ধরনের জীবন মুখী আর্টিকেলগুলো পেতে আমাদের ওয়েবসাইটকে Follow করে পাশেই থাকুন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জানবো আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

dfsfsdfdg